বাওড় নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরই ধরে খুন হয়েছেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান মিন্টু। সোমবার যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমি আহমেদের আদালতে আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন টিপু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছে। সে জানায় হত্যাকাণ্ডে সন্ত্রাসী শামিমসহ ৮ জন অংশ নেয়।
এ ছাড়াও আরো তিন কারণ স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আটক টিপু সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের শহিদুল্লাহ ওরফে শহিদের ছেলে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বেলা ৩ টার দিকে সিংহঝুলি ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই মশিউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গুলি করে হত্যা করা হয় চেয়ারম্যান মিণ্টুকে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ টিপুসহ দু’জনকে আটক করে। আটক অপরজন হলো, চৌগাছা উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের শাহাজান মিয়ার ছেলে বিদ্যুৎ। রোববার তাদের দু’জনকে আটকের পরে সোমবার পুলিশ আদালতে প্রেরণ করে।
এর মধ্যে আটক জাহাঙ্গীর হোসেন টিপু আদালতে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে বলেন, চারটি কারণে চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান মিন্টুকে হত্যা করা হয়েছে। কারণগুলো হলো, জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের শামিম একটি বাওড়ে মাছের চাষ করতো। দু’বছর আগে মিন্টুর পরামর্শে বাওড়টি শামিমের হাত ছাড়া হয়ে যায়। বাওড়টি ফিরে পেতে শামিমের স্ত্রী একাধিকবার মিন্টুর কাছে আসে। কিন্তু কোন ভাবেই মিন্টুর মন গলাতে পারেনি। সে কারণে তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে শামিমের স্ত্রী কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করে। আবার একই ঘটনায় শামিমের পিতাও মিন্টুর কাছে আসছিল। তিনিও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। শামিম এর পরে আরো একটি বাওড় দখল করে মাছের চাষ শুরু করে। কিন্তু মিন্টু ওই বাওড়টিও তার কাছ থেকে বেদখল করে। সর্বশেষে চৌগাছা এলাকায় বিল্লাল নামে এক যুবক খুন হয়। ওই খুন মামলায় শামিমকে আসামি করতে মিন্টু সহযোগিতা করে।
এ চারটি ঘটনায় শামিম এলাকা ছাড়া হয়ে যায়। এর পর থেকে শামিম তাকে খুন করতে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তার মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে মিন্টুকে খুন করতে। তারই অংশ হিসেবে ২৬ সেপ্টেম্বর শামিমসহ ৮ জনে ওই হত্যাকান্ডে অংশ নেয়। তারা হলো, শামিম, আমিরুল ইসলাম, নান্নু, বিদ্যুৎ, টিপু, টুটুল। অন্য দু’জনের নাম জানা যায়নি। তবে আটক জাহাঙ্গীর হোসেন টিপু আদালতে স্বীকার করলেও বিদ্যুৎ এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি।
এদিকে শনিবার রাতে নিহত মিন্টুর স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা বাদী হয়ে চৌগাছা থানায় ৯ জনকে আসামি দিয়ে মামলা করেন। এর মধ্যে মিলন, নান্নু, আমিনুর, ফারুক পলাতক রয়েছে। রোববার ডিবি পুলিশ ওই দু’জনকে আটক করে। Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
আরো সংবাদ পড়ুন