যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান মিন্টু হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে জাহাঙ্গীর হোসেন টিপু নামে এক আসামি।
টিপু আদালতকে জানিয়েছে, মিন্টু হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় ৮জন। তাদের মধ্যে নান্নু নামে একজন মিন্টুকে গুলি করে হত্যা করে। সোমবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমী আহমেদ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
ডিবি পুলিশ রোববার টিপুকে আটক করে। সে যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের শহিদুল্লাহ শহিদের ছেলে। এছাড়া চৌগাছা উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের শাহজান মিয়ার ছেলে বিদ্যুৎকেও আটক করে ডিবি পুলিশ।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে দুর্বৃত্তরা চৌগাছায় সিংহঝুলি ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান মিন্টুকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে মিন্টুর স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা বাদী হয়ে চৌগাছা থানায় ৯জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামিরা হলো চৌগাছার চিহ্নিত সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের শামীম, বিদ্যুৎ, তুহিন, সিংহঝুলি গ্রামের ফারুক, বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের মিলন, গরীবপুর গ্রামের টুটুল, সদর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের মোখলেসুর রহমান নান্নু, পাঁচবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন টিপু ও বেনাপোলের কাগজপুকুর গ্রামের আমিনুর।
রোববার যশোরের পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব ভদ্রের নির্দেশে এ তদন্তভার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। দায়িত্ব পেয়ে মোবাইলের কললিস্ট ধরে টিপু ও বিদ্যুৎকে আটক করে তারা। সোমবার আদালতে হাজির করলে টিপু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
ডিবি পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান জানান, টিপু তার জবানবন্দিতে বলেছে সে হত্যা মিশনে অংশ নেয়। হত্যায় জড়িতদের অপর ৭জনের মধ্যে ৫জনকে সে চেনে। তার মধ্যে আটক বিদ্যুতও রয়েছে। তারা তিনটি মোটরসাইকেলে করে মিন্টুকে হত্যার উদ্দেশে যায়।
ওসি মনিরুজ্জামান আরো জানান, টিপুর ভাষ্য মতে হত্যার নেপথ্যে রয়েছে চৌগাছার বহুল আলোচিত বাহিনী প্রধান শামীম। সে নিজেও হত্যায় অংশ নেয়। মূলতঃ চৌগাছা উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর বাওড় সংলগ্ন ডাইনার বিলে ঘের করে মাছ চাষ করতো শামীম। চেয়ারম্যান মিন্টু ওই ঘের দখলে নেয়। এছাড়া চেয়ারম্যান মিন্টু কর্তৃক নানা ঝামেলার কারণে শামীমের স্ত্রী আত্মহত্যা করে এবং বাবা মারা যান। একইসাথে শামীম মনে করে গরীবপুর গ্রামের শিশু সৌরভ হত্যা মামলায় তাকে আসামি করার পিছনে চেয়ারম্যান মিন্টুর হাত রয়েছে। এসব কারণে গত এক বছর ধরে শামীম মিন্টুকে ক্ষতি করার চেষ্টা করছিল। সর্বশেষ এক মাস আগে সে মিন্টুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরপর পেশাদার খুনি নান্নু, টিপুসহ অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগ শুরু করে।
এদিকে টিপুর জবানবন্দি শেষে বিচারক তাকে ও বিদ্যুৎকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
আরো সংবাদ পড়ুন